টুকু হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল হয়নি এক বছরেও

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ঠিকাদার জিয়াউল হক টুকু হত্যার এক বছর পার হয়ে গেলেও মামলার তদন্ত  শেষ হয়নি এখনো।

অভিযোগপত্র এক বছরেও আদালতে দাখিল না হওয়ায় হতাশ টুকুর পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা বলছেন, মামলার অভিযোগপত্র দাখিলে যত দেরি হবে, আইনের ফাঁক দিয়ে আসামিরা বেরিয়ে যাওয়ার ততই সুযোগ পাবে।


গত বছরের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী মহানগরীর রেলগেট এলাকায় ব্যক্তিগত কার্যালয়ে গুলিবিদ্ধ হন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক প্রশাসক আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউল হক টুকু। এর পর তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন তাঁর স্ত্রী নুরুন্নাহার লতা।

লতা বলেন, ‘এক বছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল না হওয়ায় টুকু হত্যার বিচার পাওয়া নিয়ে আমাদের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে। অভিযোগপত্র দাখিলে যত দেরি হবে, আইনের ফাঁক দিয়ে আসামিরা বেরিয়ে যাওয়ার ততই বেশি সময় পাবে।’ তাই দ্রুত এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের দাবি জানান তিনি।

টুকু হত্যার পর চারজনকে আসামি করে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন নুরুন্নাহার লতা। আসামিরা হলেন ঢাকার সবুজবাগ থানা এলাকার এম এ নয়ন (৪৫), রাজশাহী মহানগরীর বোসপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও জাতীয় পার্টির প্রয়াত সংসদ সদস্য ডা. সালাহউদ্দীনের ছেলে তরিকুল ইসলাম তরিক (৪৮), নগরীর মহিষবাথান এলাকার রবিউল ইসলাম (৪৬) ও সুলতানাবাদ এলাকার ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন (৪৮)।

টুকু যখন গুলিবিদ্ধ হন, তখন তাঁর চেম্বারে এই চারজন উপস্থিত ছিলেন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাঁরাই টুকুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় তাঁরা প্রচার করেন, রিভলবার পরিষ্কার করতে গিয়ে অসতর্কতাবশত টুকু গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুলিতে টুকুর পিঠের দিকে যে ফুটো হয়েছিল, তা তুলনামূলক ছোট। এ থেকে বোঝা যায়, পেছন থেকে টুকুর শরীরে গুলি প্রবেশ করেছে।

গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তরিক, রবিউল, জসিম ও নয়ন টুকুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করার পর সবাই পালিয়ে যান। টুকুর স্ত্রীর দাবি, ঠিকাদারি কাজের অর্থ লেনদেনকে কেন্দ্র করে তরিক, রবিউল ও জসিম ভাড়াটে খুনি নয়নকে দিয়ে তাঁর স্বামীকে হত্যা করিয়েছেন। টুকু মাঝেমধ্যেই তরিক, রবিউল ও জসিমের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতেন। পাওনা টাকা চাইতেন।

টুকু মারা যাওয়ার পর পুলিশ রবিউল ও জসিমকে গ্রেপ্তার করে। তবে এখন তাঁরা জামিনে রয়েছেন। অন্যদিকে, গত বছরের ৪ মে প্রধান আসামি এম এ নয়ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু এখনো পলাতক মামলার ২ নম্বর আসামি তরিকুল ইসলাম তরিক।

টুকু হত্যা মামলাটি প্রথম তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছিলেন বোয়ালিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম বাদশা। পরে পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আলোচিত এ মামলা সিআইডিতে হস্তান্তর করে। এরপর তদন্ত শুরু করেন সিআইডির পরিদর্শক মাহবুব আলম। কয়েক মাস আগে তিনি বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। এখন মামলাটি তদন্ত করছেন সিআইডির পরিদর্শক আসমাউল হক।

মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা আসমাউল হক বলেন, তদন্ত শেষ না হওয়ায় মামলাটির অভিযোগপত্র এখনো আদালতে দাখিল করা যায়নি। তবে তদন্ত অনেক দূর এগিয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযোগপত্র দাখিলের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

No comments

সরকার নির্লজ্জভাবে প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের নির্যাতন করছে : ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকার নির্লজ্জভাবে বিরোধীদলের প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের নির্যাতন করছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এ ...

Powered by Blogger.